ফার্ম মেশিনারি-১ - প্রথম পত্র (নবম শ্রেণি) - পাওয়ার টিলার চালনা

পাওয়ার টিলার অধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে জমি চাষ এবং কৃষি কাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত জনপ্রিয় একটি যন্ত্র। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে দিয়ে কৃষি প্রযুক্তিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। জমি চাষের জন্য গরু ও লালনের পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে কলের লাঙ্গল পাওয়ার টিলার। এ অধ্যায়ে পাওয়ার টিলারের বিভিন্ন অংশের নাম, পাওয়ার টিলার চালনার পূর্বে ইনডি, পাওয়ার টিলার চালনা, ঢাকার ব্যবহার, পাওয়ার টিলারে লাগল সংযোগ, পিয়ার পরিবর্তন, রক্ষণাবেক্ষণ, দোষ-ত্রুটি কারণ ও প্রতিকার ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।

Content added By
Content added By

পাওয়ার চালনার আগে ইহার পূর্ব প্রস্তুতিসমূহ নিম্নরূপ- 

১. ফুয়েল ট্যাংকে জ্বালানির পরিমাণ সঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা করতে হবে।
২. রেডিয়েটরে কুলিং ওয়াটার বা পানির লেভেল পরীক্ষা করতে হবে। 
৩. ডিপ স্টিক এর মাধ্যমে ইঞ্জিন অরেলের পরিমাণ পরীক্ষা করতে হবে। 
৪. ঢাকার হাওয়ার চাপ ঠিক আছে কিনা তা দেখতে হবে।
৫. চাকার নাট / বোল্ট টাইট আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। 
৬. ব্রেক ঠিক মতো কাজ করে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে। 
৭. সঠিক ভাবে কাজ করে কিনা তা চেক করতে হবে। 
৮. হ্যান্ড স্লিপ এর অ্যাডজাস্টমেন্ট সঠিক আছে কিনা তা চেক করতে হবে ।

Content added By

ইঞ্জিন চালু করার পূর্বে ইঞ্জিনের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করতে হবে। যেমন- ফুয়েল ট্যাংকে বালানির পরিমাণ, ইঞ্জিন অয়েল লেভেল, রেডিয়েটরের পানির লেভেল, ব্রেকিং এ্যাকশন, চাকায় হাওয়ার প্রেশার ও নাট-বোল্ট টাইট ইত্যাদি সঠিক থাকলে নিম্নে লিখিত ভাবে ইঞ্জিন চালু করতে হবে-

১. প্রথমে ইঞ্জিনের এক্সেলারটর লিভারকে স্ট্যার্টিং পজিশনে আনতে হবে এবং গিয়ার নিউট্রাল এবং ক্লাচ ডিজাদেজ পজিশনে আনতে হবে ও ফুয়েল কৰু অন করতে হবে। 
২. এরপর বাম হাতে ডি-কম্প্রেশন নিতার এবং তার হাতে স্ট্যার্টিং লিতার ঘরে হাতল ঘুরিয়ে অথবা ইসমিশন সুইচের সাহায্যে ইঞ্জিন চালু করতে হবে। 
৩. ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়ার পর তেলের প্রেশার মাপার নাম ইন্ডিকেটর চেক করতে হবে এবং ইহা উপরদিকে উঠেছে কিনা দেখতে হবে এবং ইজিকে ৪০০-৫০০ RPM এ আইডলিং স্পীডে ৫-৭ মিনিট করতে হবে। 
৪. এখন এক্সেলারেটর টেনে ইঞ্জিনের স্পীড লোডিং পজিশনে আনতে হবে। চালু রেখে গরম 
৫. ক্লাচ লিভারের সাহায্যে ক্লাচ সিস্টেমকে ডিজানো পজিশনে রাখতে হবে। 
৬. এরপর গিয়ার শিফটিং লিভারকে ১নং গিয়ার পজিশনে সিলেকশন করতে হবে। 
৭. এখন ক্লাচ লিভারের সাহায্যে ক্লাচকে ধীরে ধীরে “এনগেজ” অবস্থানে আনলে পাওয়ার টিলার চলা শুরু করবে। 
৮. এরপর পাওয়ার টিলারের স্পীড বৃদ্ধি করার প্রয়োজন হলে উপযুক্ত নিয়মানুযায়ী ক্লাচকে “ডিজএলেজ” পজিশনে এনে পিয়ার শিফটিং লিভারকে ২নং লিয়ার পজিশনে সিলেকশন করতে হবে এবং ক্লাচ লিভারকে ধীরে ধীরে এনগেজিং অবস্থানে আনলেই স্পীদ্ধ বা গতি বৃদ্ধি পাবে । 
৯. এ নিয়মে পিয়ার পরিবর্তনের মাধ্যমে পাওয়ার টিলারের গতি বাড়ানো বা কমানো হয়। 
১০. স্টিয়ারিং হ্যান্ড গ্রিপের মাধ্যমে পাওয়ার টিলারকে ডানে অথবা বামে নেওয়া যায়। অর্থাৎ ডান দিকে যাওয়ার প্রয়োজন হলে ডান পাশের স্টিয়ারিং হ্যান্ড গ্রিপ এবং বাম দিকে যাওয়ার প্রয়োজন হলে বাম পাশের স্টিয়ারিং হ্যান্ড গ্রিপ চেপে ডানে বা বামে যাওয়া যায়। উভয় হ্যান্ড গ্রিপ এক সাথে চাপলে পাওয়ার টিলারের গতি কমে গিয়ে থেমে যায়।
১১. পাওয়ার টিলারকে পিছনে নেওয়ার প্রয়োজন হলে ক্লাচকে ডিজএনেজ পজিশনে পিয়ার শিফটিং লিভারকে রিভার্স গিরারে সিলেকশন করতে হবে। 
১২. এরপর ক্লাচ লিভারকে ধীরে ধীরে “এনগেজিং” অবস্থানে আনলেই পাওয়ার টিলার পিছনের দিকে যাবে। 
১৩. পাওয়ার টিলারকে বন্ধ করার জন্য ক্লাচকে ডিজএলেজ পজিশনে এনে গিয়ার শিফটিং লিভারকে নিউট্রাল পজিশনে সিলেকশন করতে হবে। 
১৪. এরপর প্রোটল লিভারকে অফ বা জিরো (OFF/0) পজিশনে আগুনলেই পাওয়ার টিলার বন্ধ হয়ে যাবে। 

এভাবে ধারাবাহিক ভাবে উপরোক্ত নিয়ম অনুসরন করে পাওয়ার টিলার চালনা সম্পন্ন করতে হবে।

Content added By

পাওয়ার টিলার চলার জন্য ঢাকার ব্যবহার অপরিহার্য্য। ঢাকার মাধ্যমে পাওয়ার টিলারে যেমন এক স্থান কে অন্য স্থানে আনা নেওয়া করা যায়, তেমন পাওয়ার টিলারে ভারও ঢাকা বহন করে থাকে। শুকনা জমি চাষ করা এবং রাস্তার চলাচলের জন্য রাবারের চাকা ব্যবহার করা হয় এবং কানা জমি চাষ করার জন্য লোহার ঢাকা বা এন্টিডি হুইল ব্যবহার করা হয়।

ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে পাওয়ার টিলারের ঢাকা দিই ভাগে ভাগ করা হয়েছে যেমন- 
১। রাবারের চাকা 
২। লোহার ঢাকা বা এন্টিস্কিড হুইল

Content added By

কৃষিক্ষেত্রে জমি চাষা-বাদের জন্য বিভিন্ন প্রকার যান্ত্রিক লাঙ্গল ব্যবহার কর হচ্ছে। এর মধ্যে পাওয়ার টিলারে লাঙ্গল নির্বাচনের জন্য নির্বাচিত লাগলসমূহের নাম দেওয়া হলো :

রোটারি প্লাউ (Rotry Plough): 
ধান চাষের জন্য রোটারি লাগল খুবই উপযোগী। ছোট, নরম ও কাঁদামিটিতে রোটারি প্লাউ দিয়ে চাষ দিয়ে জমি তৈরি করা হয়। রোটারি প্লাউ এর সাথে বিভিন্ন আকৃতির স্টিল ব্রেডযুক্ত লাগল ব্যবহার করা হয়।

রিজার (Ridger): 
ফসল ক্ষেত্রে প্রাথমিক চাষ দেওয়ার পর রিজার দিয়ে আইন বা খাদ তৈরি করা হয়। এই খাদ ফসলের বীজ বা চারা লাগানো জন্য তৈরি করা হয়। এ ছাড়া জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ও বিজ দিয়ে খাপ তৈরি করা হয় ।

Content added By

পাওয়ার টিলার ড্রাইভিং করতে হলে গিয়ার কীভাবে শিফটিং বা পরিবর্তন করতে হয় সে ব্যপারে দক্ষতা থাকতে হবে । গিয়ার শিফটি বা পরিবর্তনের নিয়মাবলী নিম্নরূপ- 

গিয়ারশিকটিং (Gearshifting) 
ক) ক্লাচ লিভার “ভিজএনগেজ" অবস্থানে নিতে হবে। 
খ) প্রধান গিয়ার শিফটিং লিভার শিফট করুন যতটুকু গতি দরকার সে মতে গিয়ার শিকটিং লিভার রেঞ্জ বাড়াতে হবে। রোটারি প্লাউ এর গিয়ার শিফটিং লিভার রোটারির ঘূর্ণায়মান গতি নিয়ন্ত্রণ করে। গিয়ার শিফটিং লিভার এর অবস্থান পরিবর্তন করে টিলার এর গতি কম বেশী করা যায়। 
গ) পিয়ার শিফটিং অসুবিধা বা কাট হলে ক্লাচ সামান্য চাপ দিতে হবে এবং পরে গিয়ার পুনরায় শিফটিং করে পুরোপুরি মুক্ত বা ডিজএনগেজ (Disengage ) করাতে হবে। 
ঘ) রোটারি প্লাউ এর গিয়ার উঁচু বা নিচু করা যায়না যে পর্যন্ত ইহা ধীর গতিতে না নেয়া হয়। 
ঙ) রোটারি প্লাউ এর গিয়ার নিউট্রাল অবস্থানে টার্ন করলে প্রধান গিয়ার শিফটিং উল্টো বা বিপরীত দিকের নেয়া যাবে ।

Content added By

পাওয়ার টিলার চালনার পর রক্ষণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন। নিম্নে পাওয়ার টিলারের রক্ষণাবেক্ষণ দেওয়া হলো : 
১. টিলারের বাহিরের দিকের সব পার্টসগুলো পরিষ্কার করতে হবে । 
২. ডিজেল, লুব্রিকেটিং অয়েল এবং ইঞ্জিন শীতল রাখার পানি সরিয়ে ফেলতে হবে। 
৩. ১.৫ কেজি ইঞ্জিন ভেল এইচসি-৮ (HC-8) (এসওয়াই ১১৫২-৭৭) (SY1152-77) বা এসএই- ২০ (SAE-20 ) প্রায় ১২০° C পর্যন্ত গরম করতে হবে যে পর্যন্ত না তেলে বুদবুদ ওঠে। ইঞ্জিন তলায় ১ লিটার ইঞ্জিন অয়েল / ডিজেল দিতে হবে ইঞ্জিন ঘুরাবার হ্যান্ডেল দ্বারা ঘুরাতে হবে যে পর্যন্ত না লাল ভাসমান ইন্ডিকেটর উপরে ওঠে এবং চলমান সমস্ত যন্ত্রাংশে প্রবাহ দ্বারা ধুইতে হবে। 
৪. ইন্‌টেক পাইঙ্গে কিছু পানি মুক্ত তেল দিতে হবে। হ্যান্ডেল দ্বারা ইঞ্জিন ক্র্যাঙ্ক করতে হবে যতক্ষণে পিস্টন টপ সিলিন্ডার লাইনারের ভিতরকার ওয়ালে এবং ভালভাবে সিলিং সারফেসে তেল না পৌঁছে। ভালভকে আটকানো অবস্থায় সেট করতে হবে। 
৫. সিলিন্ডারের হেড কভার সরিয়ে খুলে রকার আর্ম এর উপরি ভাগে পানি মুক্ত সারফেস তেল দ্বারা চুবিয়ে দিতে হবে। 
৬. ভি-বেল্ট ঘুরিয়ে টেনশান সঠিক করতে হবে। 
৭. ভি-বেল্ট পুলিতে মরিচা ধরলে পরিষ্কারক তেল দিন, কন্ট্রোল লিভার এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশেও মরিচা প্রতিরোধক তেল দিন । ধুলাবালিতে রক্ষায় জন্য ডিজেল ইঞ্জিন ঢেকে রাখতে হবে। 
৮. পার্ক করার সময় জ্যাক দ্বারা পাওয়ার টিলারকে উঁচু করে কাঠের উপরে রাখুন যাতে টায়ার মাটির স্পর্শের উপরে এবং টায়ারকে ফুলিয়ে রাখুন। পার্কিং এর স্থানটি শুকনা পরিচ্ছন্ন এবং বায়ু চলাচলযুক্ত থাকতে হবে।

Content added By
Content added By

অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 

১. পাওয়ার টিলার কী? 
২. মোল্ডবোর্ড পাউ কী ? 
৩. রোটারি প্লাউ ? 
৪. রিজার কী ? 
৫. অ্যান্টি-স্কিড হুইল এ কাজ কী ? 
৬. পাওয়ার টিলারের পরিচিতি সম্পর্কে আলোচনা কর। 
৭. পাওয়ার টিলারের গঠনপ্রণালি উল্লেখ কর। 
৮. পাওয়ার টিলার চালনা পূর্ব প্রস্তুতি সমূহ ধারাবাহিকভাবে লিখ। 

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 

১. পাওয়ার টিলারের বিভিন্ন অংশের নাম উল্লেখ কর। 
২. পাওয়ার টিলার চালনা কৌশল বর্ণনা কর। 
৩. পাওয়ার টিলারে কয় ধরনের চাকা ব্যবহার করা হয় ও কী কী ? 
৪. রিয়ার হুইল / রাইজিং অ্যাটাচমেন্ট এর কাজ লিখ ? 
৫. পাওয়ার টিলারের গিয়ার শিফটিং বা পরিবর্তন করার পদ্ধতি আলোচনা কর। 

রচনামূরক প্রশ্ন 

১. পাওয়ার টিলারের ব্যবহৃত লাঙ্গল নির্বচন করার প্রকিয়া বর্ণনা কর। 
২. কাজের শেষে পওয়ার টিলারের রক্ষণাবেক্ষণসমূহ উল্লেখ কর । 
৩. পাওয়ার টিলারের দোষ-ত্রুটি, কারণ ও প্রতিকারসমূহ উল্লেখ কর।

Content added || updated By
Promotion